লাখো জনতার অশ্রু আর ফুলেল শ্রদ্ধায় গণমানুষের নেতা সংসদ কবি আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য সাবেক মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের শেষকৃত্যানুষ্ঠান সোমবার সন্ধায় শেষ হল। সুরঞ্জিতের একমাত্র সন্তান সৌমেন সেন গুপ্ত সন্ধা ৬টা ৫০ মিনেট সুনামগঞ্জের দিরাইয়ের আনোয়ারপুরের পিতামহের ভিটায় শেষ ইচ্ছে অনুযায়ী পিতার মুখাগ্নি করেন।’
এর আগে বেলা ৪টা ৫ মিনিটে জাতীয় এ নেতার মরদেহবাহী হেলিকপ্টার দিরাই হেলিপ্যাড মাঠে নামলে বাঁভাঙ্গা জোয়াওে মত লাখো মানুষ প্রিয় নেতার মরদেহের নিকট ছুটে যান। ’ হেলিপ্যাড থেকে মরদেহ নামান সুনামগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক এমপি ও জেলা আ’লীগের সাধারন সম্পাদক ব্যারিষ্টার এম এনামুল কবীর ইমন এবং দিরাইয়ের সুরঞ্জিতের রাজনৈতিক সহকর্মী ও সহপাঠিরা। এরপর মরদেহ এ্যাম্বুলেন্স যোগে নিয়ে যাওয়া হয় দিরাইর জগন্নাথ জিউর মন্দিরে। সেখানে ধর্মীয় রীতি সম্পন্ন শেষে লাশ ৪টা ৩০ মিটে নিয়ে যাওয়া হয় জন্মভিটে আনোয়ারপুরের বাসায়। নেতার মরদেহ বাহী গাড়ি বাসায় পৌছলে ভক্ত, রাজনৈতিক সহকর্মী, স্বজন ও দিরাই- শাল্লার মুসলিম হিন্দু জনতার আহাজারিতে এক হ্নদয় বিধারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।
’ মুহুর্তেই লাখো মানুষের কান্নায় জানান দিতে থাকে দিরাই- শাল্লার জনপদ যেন এ মহান নেতার প্রয়ানে অবিভাবক শুণ্যতায় আহাজারিতে মেতে উছেঠে। বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে পুলিশের একটি চৌকস দল উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে মুক্তিযদ্ধের অন্যতম সংগঠক ৫নং সেক্টরের ৪ নং ট্যাকেরঘাট সাব সেক্টর কমান্ডার দিরাই শাল্লা থেকে সাত সাত বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এমপিকে রাষ্ট্রীয় সম্মানো জানানো হয়। এরপরই মরদেহ সর্বস্থরের জনতার শ্রদ্ধাঞ্জলীর নিবেদনের জন্য বিকেল ৫ টায় বালুর মাঠে নিয়ে যাওয়া হয়। পরন্ত বিকেলে ভাটির জনপদের গণ মানুষের মনের রাজা সুরঞ্জিত সেনের মরদেহে ফুলেল শ্রদ্ধাঞ্জলী নিবেদন করেন, উপজেলা আ’লীগ ও অঙ্গ সংগঠন, পৌর পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, দিরাই প্রেসক্লাব, ভাটি বাংলা বাউল গবেষণা কেন্দ্র, স্বরবর্ণ সাংস্কৃতিক একাডেমি, দিরাই উপজেলা প্রশাসন, সরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি বিবিয়ানা কলেজ, দিরাই ডিগ্রী কলেজ, দিরাই উচ্চ বিদ্যালয়, বালিকা বিদ্যালয়, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত মহিলা কলেজ, ইসকন,, রামকৃঞ্জ মিশন, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত পলিটেকনিক ইন্সিটিউট,ভাটিবাংলা বাউল একাডেমি ও গবেষনা কেন্দ্র, সাংস্কৃতিক জোট,মনিমেলা খেলাঘর, বাজার মহাজন সমিতি, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ফজলে রাব্বী স্মরণের নেতৃত্বে সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগ,সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক ও সাবেক এমপি নাছির উদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে জেলা ও দিরাই উপজেলা বিএনপির, যুগান্তরের তাহিরপুরের ষ্টাফ রিপোর্টার ও বাংলাদেশ টুডের সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি হাবিব সরোয়ার আজাদ ও দিরাই প্রতিনিধি জিয়াউর রহমান লিটনের নেতৃত্বে সুনামগঞ্জ জেলা যুগান্তর স্বজন সমাবেশ, ভাটি বাংলা যুব সংগঠন, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আতাউর রহমানের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও বিভিন্ন উপজেলার উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানগণ , বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলী নিবেদন করেন।’
শ্রদ্ধাঞ্জলী নিবেদন শেষে এক সংক্ষিপ্ত শোক সভায় বক্তব্য রাখেন.ৎকেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, সুনামগঞ্জ -৫ আসনের সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক এমপি, সিলেট জেলা আ’লীগের সাধারন সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী, বানিায়াচং আজমিরীগঞ্জের সংসদ সদস্য আবদুল মজিদ এমপি, প্রয়াত সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলহাজ¦ আবদুস সামাদ আজাদের পুত্র আজিজুস সামাদ ডন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের গণযোগাযোগ বিষয়ক উপ- সম্পাদক মইনুল ইসলাম ফয়সাল, সিলেট সিটি কর্পেরেশনের সাবেক কাউন্সিলর জগদীশ দাস, অ্যাডভোকেট অবনি মোহন দাস, বিশিষ্ঠ সাংবাদিক ও লেখক দিপক চৌধুরী, অ্যাডভোকেট শামসুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগ নেত্রী অ্যাডভোকেট শামীমা শাহরিয়ার, পৌর মেয়র মোশারফ মিয়া, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান তালুকদার, উপজেলা আ’লীগ সভাপতি আছাব উদ্দিন সর্দার, সাধারন সম্পাদক প্রদীপ রায়, আ’লীগ নেতা শুভ দাস, প্রশান্ত সাগর দাস, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রঞ্জন রায় প্রমুখ।
এদিকে পিতা-মাতার শেষকৃত্যানুষ্ঠানের পাশেই সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের শেষ ইচ্ছানুযায়ী ‘যে ভিটাতে জন্ম, সে ভিটাতেই তাকে দাহ করা হল।
পারিবারীক সুত্র জানায়, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত দিরাইয়ের পৈতৃক ভিটা আনোয়ারপুরে বাসায় নীজ হাতে দ’ুটি লাল চন্দন গাছ লাগিয়েছিলেন। স্ত্রী জয়া সেনগুপ্ত ও পরিবারের লোকজনকে নিজের শেষ ইচ্ছের কথা জানাতে গিয়ে বলেছিলেন, আমার মৃত্যুও পর দিরাইয়ের আনোয়পুরের বাসায় আমার পিতা- ও মাতার শেষকৃত্যানুষ্ঠানের পাশেই যেন আমাকে দাহ করা হয়’ এছাড়াও তিনি বলে গিয়েছিলেন নীজ হাতে লাগানো দুটি লাল চন্দন কাঠের লাকড়ি দিয়েই যেন তাকে দাহ করা হয়। প্রায় ১৫ বছর পুর্বে নিজ হাতেই আনোয়ারপুরের বাসায় সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত পরিবারের লোকজন, সহপাঠি ও দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়েই গাছ দ’ুটি রোপন করেছিলেন। সুরঞ্জিতের মহাপ্রয়ানে পরিবারের লোকজন উনার ইচ্ছেই পুরণ করলেন ।
সন্ধা ৬ টা ৫০ মিনিটে একমাত্র পুত্র সৌমেন সেনগুপ্ত ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান শেষে পিতার মুখাগ্নি করেন। নিজ হাতে লাগানো চন্দন কাঠের লাকড়ি ছাড়াও রাজধানী ঢাকা থেকে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকা মুল্যের চন্দন কাঠ ও ঘি দিয়ে গণমানুষের নেতার শেষকৃতানুষ্ঠান সম্পন্ন করা হয়।’ এদিকে সুরঞ্জিতের নির্বাচনী এলাকা শাল্লা শাহেদ আলী পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠেও হেলিকপ্টার যোগে সুনামগঞ্জ থেকে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে হাজার হাজার আবাল বৃদ্ধ বণিতা তাদের প্রিয় নেতা ও অবিভাবকে ফুলের শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।